বিশেষ প্রতিনিধি : কুমিল্লার মুরাদনগরের নারীকে ধর্ষণকারী ফজর আলী ও তার সহযোগীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং দেশব্যাপী সকল নারী ও শিশু নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণের বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার ১লা জুলাই বিকাল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানব বন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ, গবেষণা, পাঠাগার সম্পাদক রীনা আহমেদ।
মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের অনুষ্ঠান নির্বাহী সুজাতা আফরোজ এর সঞ্চালনা ও পরিচালনায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন- সংগঠনের জেলার সহ-সভাপতি প্রীতিকনা দাস, সাধারণ সম্পাদক রহিমা খাতুন, সহ-সাধারণ সম্পাদক শোভা সাহা, আন্দোলন সম্পাদক সাহানারা বেগম, জেলা সদস্য ও আবৃত্তিকার ফাহমিদা আজাদ, জেলা সদস্য ও কবি কাউছার আক্তার পান্না।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কুমিল্লার মুরাদনগরে এই বর্বরোচিত ও নেক্কারজনক ঘটনা কোন সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না। অদ্ভুত এক ঘোড়ার পিঠে চলছে স্বদেশ। দূর্বৃত্তরা যা খুশী, তাই করছে। মানুষরুপী জানোয়ারেরা অন্যায়, অনাচার করে অট্টহাসি হাসছে। সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর যেন কোন কিছু করার নেই। মব জাস্টিসের ঘটনা ও এর প্রতিকার না হওয়ায় নরপশুরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে কন্যা শিশু ও নারী। এছাড়াও উগ্র মৌলবাদীদের ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির সুযোগে নরপশুরা সারাদেশে নারী ও কন্যা শিশুদের টার্গেট করে নোংরা খেলায় মেতেছে। কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘরের দরজা ভেঙে নরপশু ফজর আলী কর্তৃক এক নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে কেউ কেউ ভিডিও করে সেটি ফেসবুক, ইউটিউবে শেয়ার করেছে। ফজর আলীকে যেমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
একইভাবে যারা ফেসবুক, ইউটিউবে এই ভিডিও শেয়ার করেছে, তারাও সমান অপরাধী। সাইবার আইনে তাদেরকেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সারা দেশ থেকে এরকম আরো অনেক ঘটনার খবর আসছে। সামাজিক অবক্ষয় ও আইনের শাসন নেই বলেই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পুরুষ শ্রেণীর মধ্যে এত এত বিকৃত রুচির কাপুরুষেরা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পুরুষ সমাজের উচিত এই কুলাঙ্গারদের প্রতিরোধ করা। তা না হলে পুরুষদের এই দল ভুক্তই মনে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, পূর্বে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি চালু ছিল। কিন্তু এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না কেন? আইনের শাসন কোথায়? দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার ফলে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘরে-বাইরে নারী ও কন্যা শিশুরা হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। দ্রুততম সময়ে নারী ও শিশু ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানেই নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা সেখানেই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি দেশে দ্রুত আইনের শাসন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। নারী ও পুরুষ নয়, মানুষ হিসেবে একে অপরকে সম্মান করতে হবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে দেশ চরম অন্ধকারে তলিয়ে যাবে।
মানববন্ধনে জেলা, শহর ও পাড়া কমিটির অর্ধ শতাধিক সদস্য অংশগ্রহণ করেন।